ইসলাম অর্থ শান্তি। ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা সব সময় শান্তির কথা বলে। যারা ইসলাম ধর্মের অনুসারী তাদের বলা হয় মুসলিম। ইসলাম ধর্মটি মূলত পাঁচটি রুকন বা খুঁটির উপর প্রতিষ্ঠিত। ইসলাম ধর্মের প্রথম খুঁটি বা রুকুন হচ্ছে কালেমা বা ঈমান। ঈমান অর্থ বিশ্বাস। আর কালেমা একজন মুসলিম বা ইসলাম অনুসারীর বিশ্বাস কেই প্রতিষ্ঠিত করে। ইসলাম ধর্মের বা মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে কুরআন। পবিত্র কুরআন পাক এ এই পাঁচটি রুকুন বা খুঁটির কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পাঁচটি খুঁটি হচ্ছে (১) কালেমা , (২) সালাত(নামজ) , (৩) যাকাত, (৪) রোজা (সাওম), (৫) হাজ্জ । বিশেষত কালেমার কথা। একজন মুসলিম এর সর্বপ্রথম দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে এই কালেমার উপরে বিশ্বাস স্থাপন। শুধু তাই নয় অন্তরে বিশ্বাস স্থাপনের পাশাপাশি এই কালেমা মুখে ও বলতে হয়।
ইসলাম এ মূলতঃ পাঁচটি কালেমা আছে। এগুলো হল কালেমা তাইয়্যবা, কালেমা শাহাদাত, কালেমা তাওহিদ, কালেমা তামজিদ এবং কালেমা রাদ্দে কুফর। তন্মদ্ধ্যে কালেমা ‘তাইয়্যবা’ প্রধান। এছাড়াও কালেমা শাহাদাত, কালেমা তাওহিদ, কালেমা তামজিদ এই তিনটি কালেমার গুরুত্ব ও অপরিসীম। কালেমা তাইয়্যবা হচ্ছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)।” যার বাংলা অর্থ হচ্ছে “আল্লাহ্ ব্যাতীত কোন ইলাহ(উপাস্য) নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয় এবং হযরত মোহাম্মাদ (সা.) তার প্রেরিত রাসুল।”
কালেমার প্রথম অংশটিতে আল্লাহ্র একেশ্বর বাদ বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নাই তিনি এক ও অদ্বিতীয়। এই বিশ্বাসই ইসলাম এর মূল ভিত্তি। দ্বিতীয় অংশটিতে বলা হয়েছে যে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ্র প্রেরিত রাসুল। এই একটি বাক্যের মধ্যে ইসলাম এর সকল কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এই বাক্যটিই ইসলাম এর মূলমন্ত্র। একজন মুসলিম ব্যক্তিকে সর্বপ্রথম এই বাক্যটিতে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় ও এটি উচ্চারন করতে হয়। ইসলাম এ বহু ঈশ্বর বাদের কোন স্থান নেই। ইসলাম সবসময় এক ঈশ্বর বাদে বিশ্বাস করে। কালেমা তাইয়াবা এই
কারণেই ইসলাম এর মূলমন্ত্র বলে বিবেচিত হয়। এই কালেমা উচ্চারনের মাধ্যমে একজন মুসলিম তার একমাত্র উপাস্য আল্লাহ্ তাআলা এর একেশ্বর বাদে বিশ্বাস স্থাপন করে ও আল্লাহ্র সকল নির্দেশ মেনে চলার জন্য ওয়াদা করে।
এছাড়াও কালেমা শাহাদাত, কালেমা তাওহিদ, কালেমা তামজিদ এই কালেমা গুলো এই একই কথা বর্ণনা করে।
এই কালেমা গুলো আরও প্রতিষ্ঠা করে যে আল্লাহ্র কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এই কালেমা গুলোর মাধ্যমে এটিই প্রতীয়মান হয় যে যদি আল্লাহ্র কোন সমকক্ষ থাকত বা কোন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকত তবে অনেক আগেই তাদের মধ্যে কোন না কোন সংঘর্ষ হত অথবা কোন না কোন উপায়ে একাধিক ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমান হয়ে যেত। কিন্তু আজও তা হয়নি।
পবিত্র কুরআন পাকে সূরা ইখলাস নামক অপর একটি সূরায় আল্লাহ্ তাআলা ঘোষণা করেছেন যে “তিনি কাহারও থেকে জন্ম গ্রহন করেননি ও কাউকে জন্ম দেননি।”
সবগুলো কালেমারই মূলমন্ত্র হচ্ছে আল্লাহ্ ছাড়া কোন দ্বিতীয় ঈশ্বরের অস্তিত্ব নাই এবং হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ্র প্রেরিত সর্বশেষ রাসুল।
শেষ কালেমা কালেমায়ে রাদ্দে কুফর এর মাধ্যমে একজন মুসলিম আল্লাহ্র নিকট তার সকল গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং এই সাক্ষ্য প্রদান করে যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ(উপাস্য) নেই। এর সাথে সাথে এই কালেমা উচ্চারণের মাধ্যমে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা হয় এই জন্য যে আল্লাহ্ যেন একজন মুসলিম কে ইমানের পথে রাখেন এবং সকল প্রকার গুনাহের কাজ থেকে দূরে রাখেন
পরিশেষে এটাই প্রতীয়মান হয় যে একজন মুসলিম এর কাছে ইসলাম এর মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে এই কালেমা গুলো।
View the Original article
0 comments:
Post a Comment