জন্মেছিলেন ৫ খ্রিস্টপূর্বে । মানবতা যখন খাবি খাচ্ছিল অন্ধকারের রাজ্যে, তখন যিশুর আবির্ভাব। যিশু এসেছিলেন মানবতার মুক্তির স্লোগান নিয়ে। তিনি মানুষ কে মুক্তির গান শুনিয়েছিলেন। তিনি মানবতার মুক্তির জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মানবতার মহান মুক্তিদাতা। জিশু সম্পর্কে ইসলাম ধর্মেও বেশ বর্ণনা আছে। তবে তা কিছু টা ভিন্নরকম। ইসলাম বলছে, জিশু আল্লার নবী। কিন্তু খ্রিস্টীয় বিশ্বাস বলছে তিনি একজন ঈশ্বর পুত্র। ইসলাম বলছে তিনি মানবতার মক্তির দূত, যিনি মারিয়াম এর পুত্র। ইসলাম বলে, যিশু হলেন এমন একজন মানুষ যিনি কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই মাতৃ গর্ভে এসেছিলেন। এবং এটা খোদার অসীম ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। তবে খ্রিস্টীয় মতামত হল, যিশু ঈশ্বর পুত্র, যিনি ধরাধামে এসেছিলেন মানবতার ভুল শুধরাতে। তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন মানবতার চির কল্যাণ নিশ্চিত করতে।
দুটো ধর্মেই জিশুর মর্যাদা নিয়ে কেউ সংশয় করে না। তবে মর্যাদা প্রদানে কে বেশি অগ্রগামী সেই প্রসঙ্গ না হয় তোলাই থাকলো। যিশু কে ইসলাম ধর্মে ঈসা নামে ডাকা হয়। কোরআন এর বর্ণনা মতে তার উপরে নাজিল করা হয় পবিত্র ইঞ্জিল শারিফ। তবে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন। তারা ইঞ্জিল শারিফের ব্যাপারটি তুলে রেখেছে। বাইবেল এখন তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ। যিশু যখন এসেছিলো, তখন পৃথিবীতে ছিল ভীষণ অরাজকতা। কোথাও ছিলোনা সত্যের স্পর্শ । তিনি এসেছিলেন সব কিছু শুধরাতে। তিনি পেরেছিলেন। তিনি পেরেছিলেন ঘুনে ধরা মানবতাকে নতুন করে সবুজ শ্যামল সঠিক রাস্তায় পরিচালিত করতে।
একজন মহান মানুষ, যিনি মানুষের মুক্তির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। খ্রিস্টান ধর্ম মতে তিনি একজন মহা মানব, যিনি ক্রুশ বিদ্ধ হয়ে এই ধরাধাম ছেড়েছিলেন। যিনি তার অনুসারীদের কে তার জীবন উৎসর্গ করে সঠিক পথের দিশা দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন পৃথিবীকে হানাহানি মুক্ত করতে। তিনি চেয়েছিলেন মানবতাকে একটি সংবিধান দিতে যার উপর ভিত্তি করে মানবতা পৌঁছাবে একটি স্থানে, যেখানে থাকবে শ্যামল সত্যের জয়গান। মানবতা পাবে এমন একটি সমাজ, যেখানে থাকবে না অত্যাচার, থাকবে না অবিচার। যেখানে মানুষ পাবে শান্তির দিশা। তাকে ক্রুশ বিদ্ধ করে হত্যা করা হয় ৩৫ খ্রিস্তাব্দে। মাত্র অল্প এই কয়েকদিনের জীবনে তিনি ছড়িয়েছিলেন এমন আভা, যার স্পর্শে মানবতা পুলকিত হয়েছিলো।
ইসলাম ধর্মে যিশুর মৃত্যুর ঘটনা কে অস্বীকার করা হয়। ইসলাম বলে, ঈসা নবী কে ঈশ্বর উঠিয়ে নিয়েছিলেন তার স্বীয় মহিমায়। তিনি যখন শত্রু দ্বারা বেষ্টিত হয়েছিলেন তখন আল্লা তাকে চতুর্থ আকাশে তুলে নেন আর তিনি যেই ঘরে ছিলেন সেখানে শত্রু পক্ষের একজন কে তার রুপ দান করেন। তখন শত্রু পক্ষ তাদের লোক কেই ঈসা ভেবে হত্যা করে। ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস মতে, তিনি আবার এই ধরাধামে আসবেন, তবে তিনি আর নবী রুপে আসবেন না, তিনি ইসলামের নবী মুহাম্মদের অনুসারী হিসেবে আসবেন এবং অধর্ম আর অনাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবেন।
যিশু মানব ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য পরিচ্ছেদ। তার অবদান এবং ত্যাগ পৃথিবীর মানুষ স্মরণে রাখবে চিরকাল। চিরকাল তিনি হয়ে থাকবে অসংখ্য মানুষের মধ্য মনি। তিনি পৃথিবীকে যে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন তা পৃথিবীর অন্তিম লগ্ন পর্যন্ত বিরাজমান থাকবে। অটুট থাকবে তার ন্যায়ের শিক্ষা। যিশুর প্রচারিত সত্য পৃথিবীর সারাটা সময় মানবতার সেবায় কার্যকর থাকবে, তবে মানুষকে তার সত্য টা ধরতে হবে, বুঝতে এবং মানতে হবে।
View the Original article
0 comments:
Post a Comment